নিজস্ব ওএস উন্মোচন করলো চীন

টেকশহর কনটেন্ট কাউন্সিলর: নিজ দেশেই সেমিকন্ডাক্টর, সফটওয়্যার এবং টেলিযোগাযোগের সরঞ্জাম তৈরি করতে প্রথমবারের মতো ওপেন-সোর্স ডেস্কটপ অপারেটিং সিস্টেম (ওএস) উন্মোচন করেছে চীন। তবে জনগনের কাছে একে ব্যাপক ব্যবহারযোগ্য করে তুলতে দেশটির সামনে এখন পাহাড়সম কাজ। চীনের এই ওএস এর নাম দেয়া হয়েছে ওপেনকাইলিন।

ওপেনকাইলাইন দেখতে উইন্ডোজের মতোই। এটি চায়না ও ইংলিশ দুইভাষাতেই ব্যবহার করা যাবে। মাইক্রোসফট এবং এক্সেল ডকুমেন্টসের সাথে কাজ করবে ফায়ারফক্স ওয়েব ব্রাউজার এবং চীনের তৈরি অফিস স্যুটের মতো অ্যাপগুলো আগে থেকেই এখানে ইনস্টল করা আছে।

তবে সাধারন মানুষ ওপেনকাইলিন কতোটা গ্রহন করবে এটিই এখন মূল চ্যালেঞ্জ। গড় কম্পিউটার ব্যবহারকারীরা তাদের প্রোগ্রাম ও অ্যাপসগুলো কতোটা কাজ করবে সে বিষয়ে উদ্বেগে রয়েছেন। দেশে নির্মিত ওএসের প্রতি ব্যবহারকারীদের আকৃষ্ট করতে সফটওয়্যার নির্মাতাদের নিয়ে একটি ইকোসিস্টেম গঠন করতে হবে বলে মনে করেন অধ্যাপক লিয়ং।

Techshohor Youtube

দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি চায়না ইলেক্ট্রনিকস করপোরেশন ওএসটি তৈরি করেছে। বর্তমানে দেশটির বাজারে আধিপত্য করা বিদেশি সফটওয়্যারের ওপর নির্ভরশীলতা কমাতেই এ উদ্যেগ নেয়া হয়েছে। তবে কবে নাগাদ ওএসের মাধ্যমে সফটওয়্যার নির্মাণ করা যাবে সে বিষয়ক কোন সময় নির্ধারন করা হয় নি।

প্রযুক্তি খাতে নিষেধাজ্ঞার মধ্যে আত্মনির্ভরশীল হয়ে উঠতেই এ প্রকল্প হাতে নিয়েছে বেইজিং। দেশটির শীর্ষস্থানীয় দুই কোম্পানি হুয়াওয়ে এবং জেডটিইর ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

২০০৯ সালে চীন কর্তৃপক্ষ সব সরকারি অফিস ও প্রতিষ্ঠানকে তিন বছরের মধ্যে বিদেশি কোম্পানির তৈরি কম্পিউটার সরঞ্জাম ও সফটওয়্যার সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেয়। ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুরের কম্পিউটার সায়েন্স বিষয়ক সহযোগি অধ্যাপক বেন লেয়ং বলেন, ‘প্রচুর সংখ্যক গুরুত্বপূর্ণ সফটওয়্যার বিশেষ করে উইন্ডোজ যুক্তরাষ্ট্রের কোম্পানিগুলোর মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হয়। চীন ও চীনা কোম্পানিগুলোকে সহায়তা বন্ধ করতে বাধ্য করতে যুক্তরাষ্ট্র কিছু আইন প্রণয়ন করবেই।’

তবে মাইক্রোসফটের উইন্ডোজ এবং অ্যাপলের ম্যাকওসের মতো প্রযুক্তি তৈরির ক্ষেত্রে চীন এখনো অনেক পিছিয়ে। ওয়েবট্রাফিক বিশ্লেষণকারী কোম্পানি স্ট্যাটকাউন্টারের মতে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত চীনের ৮৫ শতাংশ ডেস্কটপ অপারেটিং সিস্টেম উইন্ডোজ। অ্যাপলের ম্যাকওএসও এখানে বাজার বিস্তৃত করছে। চীনে কোম্পানিটির বাজার শেয়ার আট শতাংশ।

বিদ্যমান নিষেধাজ্ঞার বাইরেও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং কোয়ান্টাম কম্পিউটিংয়ের মতো উন্নত প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছে এমন চীনা কোম্পানিতে মার্কিন বিনিয়োগ নিষিদ্ধ করতে আইন প্রণয়নের কথা ভাবছে যুক্তরাষ্ট্র। এ অবস্থায় প্রযুক্তিতে নিজেদের স্বাবলম্বী করে তুলতে ওপেনকাইলিন গঠন করা হয়েছে। চীনকে প্রযুক্তিগতভাবে এগিযে নিতে সংশ্লিষ্ট শিল্পের সহায়তা চাওয়া হয়েছে। ওপেন-সোর্স সফটওয়্যারটি অন্যান্য ব্যবহারকারীদের বিকাশে সহায়তা করার জন্য। এছাড়াও এটি সার্বজনীনভাবে ব্যবহার এবং উদ্ভাবনকেও উৎসাহী করে।

স্ট্রেইট টাইমস/আরএপি



from টেক শহর https://ift.tt/PHtV8LQ
Previous Post Next Post