টেকশহর কনটেন্ট কাউন্সিলর : কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধি সুপারবাগের জন্য আবাওসিন নামে রাসায়নিকযুক্ত নতুন অ্যান্টিব্যাক্ট্রিয়াল আবিষ্কার করেছেন কানাডার গবেষকরা। অ্যাসিনটোব্যাকটার বাউমান্নি নামের সুপারবাগে আক্রান্ত রোগিদের জন্য এটি হবে যুগান্তকারী চিকিৎসা পদ্ধতি।
ন্যাচার কেমিকেল বায়োলজিতে সম্প্রতি গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে। গবেষণাটির নের্তৃত্ব দিয়েছেন ম্যাক মাস্টার ইউনিভার্সিটির সহযোগি অধ্যাপক জোনাথন স্টোক।
অ্যাসিনটোব্যাকটার বাউমান্নি মূলত হাসপাতাল থেকে আসা এক ধরনের রোগ-জীবানু। এই জীবানুর আক্রমনে নিউমোনিয়া, মেনিনজাইটিস এবং সেপসিসের মতো অসুখ হয়। এ প্রসঙ্গে জোনাথন স্টোক বলেছেন, ‘এটি নিয়ন্ত্রন করা খুবই কঠিন। এজন্য যখন আমরা নতুন অ্যান্টিবায়োটিক খুঁজতে যাই তখন আমরা নতুন কাঠামো ও একদম নতুন কার্যক্ষমতা এমন প্রয়োজনীয় রাসায়নিক অ্যান্টিবায়োটিক খুঁজি যেগুলোর রয়েছে।
এই রোগের জন্য ঠিক কোন ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক ভালো কাজ করবে তা বোঝতে হাজার হাজার রাসায়নিক পরীক্ষা করেছি আমরা। এটি খুবই, শ্রমসাধ্য ও ব্যয়বহুল কাজ। প্রথিতযশা বিজ্ঞানীদের একটি আন্তবিভাগীয় দল অ্যাসিনটোব্যাকটার বাউমান্নির বিরুদ্ধে নতুন অ্যান্টিবায়োটিক খোঁজে পেতে এআইয়ের সহায়তা নিয়েছেন। এ কাজে স্টোকের সাথে ছিলেন ম্যাসাচুয়েটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির বিজ্ঞানীরা। অধ্যাপক স্টোক আরো বলেছেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অ্যালগারিদমগুলি ব্যবহার করে তারা এই রাসায়নিকগুলোকে আরো ভালোভাবে দেখতে পায়। কেমিক্যালের বিন্যাসগুলি বিস্তৃতভাবে দেখে সিদ্ধান্ত নেয়া যায় কোনগুলি ল্যাবে নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা যাবে।’
অ্যাসিনটোব্যাকটার বাউমান্নি সুপারবাগ ধ্বংস করতে পারে এমন রাসায়নিক খোঁজে পাওয়ার আগে এআইকে প্রশিক্ষণ দিয়েছেন অধ্যাপক স্টোক ও তার দল। প্রশিক্ষণের অংশ হিসেবে ব্যাকটেরিয়া ধ্বংসকারী রাসায়নিক ও রাসায়নিকের কাঠামো বিষয়ে তথ্যগুলো এআইতে প্রবেশ করানো হয়। এছাড়া বিজ্ঞানীরা যে ধরনের অ্যান্টিব্যাক্ট্রেয়াল কার্যকলাপ চেয়েছেন সে বিষয়েও এআইকে নির্দেশনা দেয়া হয়। অধ্যাপক স্টোক আরো বলেছেন, ‘ল্যাবরেটরিতে আমরা প্রায় সাড়ে সাত হাজার রাসায়নিকের পরীক্ষা করেছি। কোন রাসায়নিকটি অ্যাসিনটোব্যাকটার বৃদ্ধিতে বাধা দেয় আর কোনটি দেয় না তা যাচাই করা হয়েছে।’
এআই মডেলটি প্রশিক্ষণ দেয়া হয়ে গেলে গবেষকদের দলটি তখন এমন রাসায়নিক দেখাতে পারে যা আগে দেখা যায় নি। এরপর এই রাসায়নিকগুলির মধ্যে কোনটি অ্যান্টিব্যাক্টারিয়াল আর কোনটি নয় সে বিষয়ে পূর্বাভাস দিতে পারে এআই মডেলটি। আর এভাবেই আবাওসিন নামে রাসায়নিকযুক্ত নতুন অ্যান্টিব্যাক্ট্রিয়াল আবিষ্কার করেছে এআই। পরবর্তীতে ল্যবরেটরিতে আরো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে এই রাসায়নিকটি অ্যাসিনটোব্যাকটার বাউমান্নি আক্রান্ত ব্যাক্তির চিকিৎসায় ব্যবহার করা যায়।
অধ্যাপক স্টোক বলেছেন, পরীক্ষাগারে ওষুধটি নিখুঁত করে তোলা এবং এরপর ক্লিনিক্যল ট্রায়াল করা। তিনি আরো বলেছেন, ‘আমরা যখন প্রকল্পটি সম্পন্ন করি তখন অনুভব করি এমন একটি যুগে প্রবেশ করেছি যেখানে এআই খুব অর্থপূর্ণভাবে ক্লিনিক্যল মেডিসিন আবিষ্কারকে প্রভাবিত করতে পারবে।’
সিবিসি/আরএপি
from টেক শহর https://ift.tt/YOleWNS