এনড ট এনড বযবসথ উঠ গল মযসজর গপনয়ত ক আর থকব ?

টেকশহর কনটেন্ট কাউন্সিলর: যুক্তরাজ্য সরকার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর ম্যাসেজে অতি সুরক্ষা ব্যবস্থা ই টু ই এনক্রিপশন ব্যবস্থা তুলে নেয়ার জন্য আইন করতে যাচ্ছে। অন্যদিকে মেটার সিইও মার্ক জাকারবার্গ তার কোম্পানির সব অ্যাপের ম্যাসেজ আরো নিরাপদ করতে গোপনীয়তা বাড়াচ্ছে। এ নিয়ে যুক্তরাজ্য সরকারের সাথে বিবাদে জড়িয়ে পড়তে পারে জাকারবার্গ। যুক্তরাজ্য সরকারের মতো আরো যেসব দেশ ই টু ই এনক্রিপশনের বিপক্ষে রয়েছে তারা বিষয়টি নিবিঢ়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।

‘এন্ড টু এন্ড এনক্রিপশন’, ‘ব্যাকডোরস’ এবং ‘ক্লায়েন্ট সাইড স্ক্যানিং’ প্রযুক্তি খাতে বেশ ভারী শব্দ। এগুলো মূলত আমাদের বার্তাগুলোকে অতি গোপনীয়ভাবে রাখে। তবে খুব সাধারন একটি প্রশ্নে বাস্তবতা সামনে চলে এসেছে। প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো কি মানুষের বার্তা বা ম্যাসেজ পড়তে পারবে? সিলিকন ভ্যালির সাথে বিশ্বের প্রায় ডজনখানেক দেশের বছরের পর বছর ধরে এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা চলছে। হোয়াটসঅ্যাপ, আই ম্যাসেজ, অ্যান্ড্রয়েড ম্যাসেজ এবং সিগনালসহ সবাই এন্ড টু এন্ড এনক্রিপশন নামে অতি নিরাপদ ব্যবস্থা ব্যবহার করে আসছে। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে একদিকে প্রেরক এবং অন্যদিকে শুধুমাত্র গ্রাহক পাঠানো বার্তাটি পড়তে, মিডিয়া দেখতে পারে অথবা ফোন কল শুনতে পারে। এমনকি অ্যাপের নির্মাতারাও কনটেন্টটি পড়তে পারে না।

বিগত দশ বছর ধরে এন্ড টু এন্ড এনক্রেপ্টেড অ্যাপগুলো ক্রমে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। প্রতিদিন শত শত কোটি মানুষ এই সুপার সিকিউর ব্যবস্থাটি ব্যবহার করছে। চারবছর আগে মেটার সিইও জাকারবার্গ ম্যাসেঞ্জার অ্যাপ এবং পরবর্তীতে ইনস্টাগ্রামে এন্ড টু এন্ড এনক্রিপশন ব্যবহারের ঘোষণা দেন। এরপর থেকে প্রযুক্তিটির যে উত্থান তা অনিচ্ছাকৃতভাবে হলেও মেনে নিতে হয়েছে বেশিরভাগ সরকার ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠানগুলোকে।

Techshohor Youtube

চারবছর আগের ঘোষণার পর থেকেই জাকারবার্গ এবং তার প্রকৌশলীরা ধীরে ও চমৎকারভাবে প্রযুক্তিটি নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। তবে এই সুবিশাল কাজটি কিভাবে এগিয়ে যাচ্ছে সে বিষয়ে কথা বলতে বরাবরই অস্বীকার করেছে মেটা। তবে চলতি বছরের শেষের দিকে কোম্পানিটি এ বিষয় নিয়ে খোলামেলা কথা বলতে পারে বলে জানা গিয়েছে। যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, নিউজিল্যান্ড, যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, তুরস্ক, জাপান ও ব্রাজিল ছাড়াও ইন্টারপোলের মতো আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলো প্রযুক্তিটির সমালোচনা করছে।

তবে এখন পর্যন্ত কোন গণতান্ত্রিক সরকার জনপ্রিয় এসব অ্যাপের কার্যক্রমে হস্তক্ষেপ করতে কোন আইন প্রণয়নের ঝুঁকি নেয় নি। অবশ্য এদিক থেকে যুক্তরাজ্য কিছুটা ব্যতিক্রম অবস্থানে রয়েছে। অদূর ভবিষ্যতে অনলাইন সেফটি বিল নামে একটি আইন প্রণয়ন করতে যাচ্ছে দেশটি। এই আইনের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে বেআইনি তথ্য যাচাইয়ের জন্য ম্যাসেজগুলো স্ক্যান করার ক্ষমতা রাখা।

যুক্তরাজ্য সরকার বলছে, পুলিশ অফিসাররা যদি ম্যাসেজের কনটেন্টগুলো দেখতে না পায় তাহলে অপরাধী বা সন্ত্রাসীদের দোষী সাব্যস্ত করতে তথ্যপ্রমান সংগ্রহের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস হারাবে। এছাড়া এই অনলাইন গোপনীয়তার মধ্যে বাচ্চাদের বেড়ে উঠা নিয়েও উদ্বেগ রয়েছে। যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুয়েলা ব্রেভারম্যান সোমবার মার্ক জাকারবার্গকে লেখা এক চিঠিতে বলেছেন, এন্ড টু এন্ড এনক্রিপশন ‘একটি শিশুকে আঘাত করতে ইচ্ছুক ব্যক্তির জন্য আশীর্বাদ।’

বুধবার ন্যাশনাল সোসাইটি ফর দ্য প্রিভেনশন অব ক্রুয়েলিটি টু চিলড্রেনের (এনএসপিসিসি) জরিপে দেখা গিয়েছে, শিশুদের সুরক্ষিত রাখতে পুলিশ কর্মকর্তাদের হাতে ম্যাসেজ চেক করার ক্ষমতা রাখার পক্ষে রয়েছে ব্রিটিশরা। মোট এক হাজার ৭২৩ জন প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকের ওপর পরিচালিত জরিপে ৭৩ শতাংশ অংশগ্রহনকারীই শিশু নির্যাতন বন্ধে ম্যাসেজ স্ক্যান করতে আইন করার পক্ষে মত দিয়েছেন। অন্যদিকে প্রথিতযশা ৬৮ জন নিরাপত্তা ও প্রাইভেসি বিষয়ক গবেষকের লেখা এক চিঠিতে বলা হয়েছে, অনলাইন সেফটি বিল এন্ড টু এন্ড এনক্রিপশন ব্যবস্থা ভেঙ্গে ফেলতে সফল হবে।

ব্যবহারকারীদের গোপনীয়তা রক্ষা করে প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো শিশু নিরাপত্তামূলক পদক্ষেপ গ্রহন করবে আইনটিতে এমন ব্যবস্থা রাখা হবে। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন এ ধরনের কিছু করা সম্ভব নয়। এদিকে হোয়াটসঅ্যাপ এবং সিগনাল জানিয়েছে এন্ড টু এন্ড এনক্রিপশন ব্যবস্থা বাতিলের পরিবর্তে তারা যুক্তরাজ্য থেকেই চলে যেতে পারে।

অন্যদিকে মে মাসে ইলন মাস্ক জানিয়েছেন তিনিও টুইটারের বার্তাগুলোর জন্য এন্ড টু এন্ড এনক্রিপশন নির্মাণ করেছেন। এই প্রযুক্তিটি গ্রহন করা বেশ জটিল ও ব্যয়বহুল হলেও শীর্ষ প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো একে বেশ গুরুত্বপূর্ণ হিসেবেই দেখে থাকেন। বেশ কয়েক বছর ধরে তথ্য ফাঁসের কেলেঙ্কারির পর পুনরায় ব্যবহারকারীদের আস্থা ফেরাতে এই প্রযুক্তিকে খুবই প্রয়োজনীয বলে মনে করেন তারা। ব্যবহারকারীরা কি শেয়ার করছে তা কোম্পানিগুলো দেখতে না পেলে পুলিশও পারবে না।

বিবিসি/আরএপি



from টেক শহর https://ift.tt/UmJSah4
Previous Post Next Post