যুক্তরাষ্ট্রে বেড়েছে চীনা ড্রোন বিক্রি, জাতীয় নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা

টেকশহর কনটেন্ট কাউন্সিলর : যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী ও দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে চীনের কোম্পানির তৈরি ড্রোন ব্যবহার বাড়ছে। এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মার্কিন আইনপ্রণেতারা।

তাদের আশঙ্কা এসব ড্রোনগুলোকে চীন মূলত দূরবর্তী নজরদারি মেশিন হিসেবে ব্যবহার করছে; যা যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা ও নাগরিকদের ব্যক্তিগত গোপনীয়তার ক্ষেত্রে হুমকিস্বরূপ। ফ্রিডম অব ইনফরমেশন অ্যাক্ট এবং পুলিশের দেয়া তথ্যানুযায়ি চীনের কোম্পানি অটেল এবং ডিজেআই এর থেকে কয়েক হাজার ড্রোন ক্রয়ে নিবন্ধন করেছে বিভিন্ন রাজ্য ও স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলো।

এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল পুলিশ বিভাগের চীনের অটেল রোবটিকসের তৈরি চারটি মডেল রয়েছে। ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনেস্ট্রেশনে ড্রোন নিবন্ধনের তথ্যে বিষয়টি জানা গিয়েছে। ক্যাপিটল পুলিশের মুখপাত্র টিম বারবার বলেছেন গত বছর প্রতিটি ড্রোন দুই হাজার ডলার করে কেনা হয়। তবে এ ড্রোনগুলো ওয়াশিংটন ডিসির আশেপাশে এখনো মোতায়েন করা হয় নি। নেটওয়ার্কের অ্যাকসেস ছাড়াই ড্রোনগুলো প্রশিক্ষণের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। লিগ্যাল এইড সোসাইটির অ্যাটর্নি জেনারেল জেরোমি গ্রিকোর ফ্রিডম অব ইনফরমেশন রিকুয়েস্টে আবেদন অনুযায়ি এসব তথ্য প্রকাশ হয়েছে। জানা গিয়ে তথ্যগুলো প্রকাশের একদিন পরেই ক্যাপিটল পুলিশ ড্রোনগুলোকে ফেলে দিয়েছে এবং তাদের কাছে আর কোন ধরনের ড্রোন নেই।

Techshohor Youtube

ক্যাপিটাল পুলিশের আমেরিকার কোন কোম্পানির পরিবর্তে চীন থেকে ড্রোন কেনার পেছনে মূলত প্রচলিত ধারাকে অনুসরনই মূল কারণ। কারণ ফ্লোরিডা, নিউ জার্সি, নিউ ইয়র্ক এবং ওয়াশিংটন ডিসির স্থানীয় সরকার বাজারের ৭০ শতাংশই অটেল ও ডিআইজির দখলে। শুধু তাই নয় ম্যারিল্যান্ড এবং ভার্জিনিয়ার বড় বড় পুলিশ ডিপার্টমেন্টগুলোতেও এই কোম্পানিগুলোর আধিপত্য। তবে গুপ্তচরবৃত্তির আশঙ্কায় চীনে নির্মিত ড্রোনের ওপর নিষেধাজ্ঞা এবং বিদেশের গুপ্তচরবৃত্তি ঠেকাতে কংগ্রেস প্রস্তাবিত আইনটি পাস করলে এসব ড্রোন চালানো বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

চীনের গুপ্তচরবৃত্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা বিভাগের ভয় থেকে বেইজিংয়ের বৃহত্তম প্রযুক্তি কোম্পানি এবং তাদের তথ্য সংগ্রহের প্রচেষ্টাকে নানাভাবে দমন করার চেষ্টা করা হচ্ছে। চীনের কোম্পানি বাইটড্যান্সের মালিকানাধিন ভিডিও শেয়ারিং প্লাটফর্ম টিকটককে যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি নিষিদ্ধ করার হুমকি দিয়েছে। ইতোমধ্যে চীনের হুয়াওয়ে এবং জেডটিইকে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

এরই ধারাবাহিকতায় আইনপ্রনেতা এবং সামরিক কর্মকর্তারা আশঙ্কা করছেন অটেল ও ডিআইজের মতো ড্রোন নির্মাতা কোম্পানিগুলোকে চীনের ক্ষমতাসীন দল কমিউনিস্ট পার্টির কাছে ছবি ও তথ্য পাঠানোর জন্য চাপ দিতে পারে বেইজিং। এসব উদ্বেগের পরিপ্রেক্ষিতেই ২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য মন্ত্রনালয় ডিআইজেকে কালোতালিকাভুক্ত করে এবং কোম্পানিটির কাছে কোন কিছু রফতানির ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়। ২০২১ সালে পেন্টাগনের মূল্যায়ন অনুযায়ি ডিআইজের প্রযুক্তি ‘জাতীয় নিরাপত্তার জন্য সম্ভাব্য হুমকি সৃষ্টি করে। এরপরেও প্রশিক্ষণ ও গোয়েন্দাদের কোন কাজে এই ড্রোন কেনার জন্য বিশেষ অনুমতি দিয়েছিলো পেন্টাগন।

সম্প্রতি সিনেটর মার্ক ওয়ার্নার এবং রিক স্কট আমেরিকান সিকিউরিটি ড্রোন অ্যাক্ট ২০২৩ আইনটি পাস করানোর জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছেন। বিলটি পাস হলে চীনসহ জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে এমন দেশ থেকে ড্রোন কেনার ওপর নিষেধাজ্ঞা আসবে।

ফোর্বস/আরএপি



from টেক শহর https://ift.tt/OWulb2k
Previous Post Next Post