‘ভার্চুয়াল শিখন প্ল্যাটফর্ম মেয়ে শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করতে শতভাগ সহায়ক’

টেকশহর কনটেন্ট কাউন্সিলর : ভার্চুয়াল শিখন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে মেয়ে শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক শিক্ষণ সম্পন্ন হয়েছে শতভাগ।

কুড়িগ্রাম এবং জামালপুরের ১২০ টি বিদ্যালয়ের ৪র্থ ও ৫ম শ্রেণির ১২,৫৩৬ জন মেয়ে শিক্ষার্থীদের শ্রেণি সময়ের আগে ও পরে ভার্চুয়াল শিখন প্লাটফর্ম এর মাধ্যমে ডিজিটাল-কনটেন্ট ব্যবহার করে বাংলা, ইংরেজি এবং গণিত শিক্ষায় সহায়তা প্রদান করা হয়।

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে তুলনা করে দেখা গেছে ইজিই কর্মসূচির আওতাধীন শিক্ষার্থীদের প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনীর সংখ্যা, প্রাথমিক শেষ করে মাধ্যমিকে ভর্তির হওয়ার সংখ্যা এবং এক শ্রেণি থেকে অন্য শ্রেণিতে সফলভাবে কৃতকার্য হওয়ার সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে প্রায় শতভাগে পৌঁছে গেছে। সেইসাথে আশ্চর্যজনকভাবে ১৮ বছরের নিচে বাল্যবিবাহের সংখ্যা শূন্য তে নেমে এসেছে।

Techshohor Youtube

বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে গণসাক্ষরতা অভিযান, সেভ দ্য চিলড্রেন ও ফ্রেন্ডশীপ এর যৌথ আয়োজনে শিখন অভিজ্ঞতা ও ভবিষ্যত দিকনির্দেশনা শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে এই তথ্যগুলো জানানো হয়। ভার্চুয়াল মাধ্যমে প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত হন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।

মন্ত্রী বলেন, শিক্ষার ডিজিটাল কনটেন্ট হচ্ছে ডিজিটাল যন্ত্রে পাঠদানের জন্য প্রচলিত পাঠ্য সূচির মানসম্মত ইন্টারএকটিভিটি, ছবি, অডিও, ভিডিও, এ্যানিমেসন, টেক্সট ও অন্যান্য মাল্টিমিডিয়া কনটেন্ট দিয়ে প্রোগ্রামিং করা সফটওয়্যার দিয়ে ডিজিটাল ডিভাইসে শিক্ষার প্রবর্তন করা । শিক্ষায় ডিজিটাল রূপান্তরে ১৯৮৭ সাল থেকে দীর্ঘ পথচলায় নানা প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখী হয়েও শিশু শিক্ষার জন্য সফটওয়্যার বানিয়েছি। ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচি বাস্তবায়নের ধারাবাহিকতায় ২০০৯ সাল থেকে গত ১৪ বছরে হাটি হাটি পা পা করে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠ্যক্রম ডিজিটালে রূপান্তরে সক্ষম হয়েছি।

মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তর অপরিহার্য। এই লক্ষ্যে শিক্ষার্থীদের জন্য ডিজিটাল কনটেন্টসহ ডিজিটাল ডিভাইস, ডিজিটাল সংযুক্তি এবং ডিজিটাল শ্রেণিকক্ষ অপরিহার্য। শিক্ষার অবকাঠামোগত যে পরিবর্তন হয়েছে সে পরিবর্তন শিক্ষা পদ্ধতিতেও করার বিকল্প নেই। প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত প্রতিটি শিক্ষার্থীর হাতে ডিজিটাল কনটেন্টসহ ডিজিটাল ডিভাইস প্রয়োজন। কেবলমাত্র প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে শিক্ষা গ্রহণের দিন শেষ। মিশ্র শিক্ষা পদ্ধতি চালুর উদ্যোগ সরকার গ্রহণ করেছে। এ উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে শিক্ষার রূপান্তরে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।

মোস্তাফা জব্বার ১৯৯৯ সালে ব্যক্তিগত উদ্যোগে গাজীপুরে আনন্দ মাল্টিমিডিয়া স্কুল প্রতিষ্ঠা এবং দেশব্যাপী আরও ৩২ টি মাল্টিমিডিয়া বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় তার অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে বলেন, কাগজের যুগের পর শিক্ষায় ডিজিটাল যুগে যাওয়ার সময় হয়েছে। কাগজের বইয়ের পাশাপাশি ডিজিটাল কনটেন্ট এবং ডিজিটাল ডিভাইস চালু করতে পারলে জাতি অনেক বেশি সুফল পাবে বলে।

গণসাক্ষরতা অভিযান এর কাউন্সিলের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য এ্যারোমা দত্ত’র সভাপতিত্বে এবং সাবেক তত্তাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও গণসাক্ষরতা অভিযান এর নির্বাহী পরিচালক রাশেদা কে. চৌধূরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড এর চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোঃ ফরহাদুল ইসলাম, সেভ দ্য চিলড্রেন এর কান্ট্রি ডিরেক্টর অনো ভান ম্যানেন, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর অ্যামিরেটাস ও এডুকেশন ওয়াচ এর মূখ্য গবেষক ড.মনজুর আহমেদ, ফ্রেন্ডশিপ এর সিনিয়র ডিরেক্টর ও শিক্ষা কর্মসূচির প্রধান বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব:) ইলিয়াস ইফতেখার রসুল, জামালপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মিজানুর রহমান, কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলা শিক্ষা অফিসার নজরুল ইসলাম, ঢাকা মোহাম্মদপুর থানা শিক্ষা অফিসার মমতাজ বেগমসহ কুড়িগ্রাম, জামালপুর, ঢাকার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকবৃন্দ বক্তৃতা করেন।

কর্মসূচির পরিচিতি, অর্জন ও সম্ভাবনা বিষয়ক মুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সেভ দ্য চিলড্রেন এর এম্পাওয়ারিং গার্লস থ্রু এডুকেশন (ইজিই) কর্মসূচির প্রকল্প পরিচালক শাহিন ইসলাম এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট এর সহযোগী অধ্যাপক ড. হ্যাপী কুমার দাশ।

এ্যারোমা দত্ত স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য স্মার্ট মানুষ গড়তে শিক্ষার ডিজিটাল রূপান্তরের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড এর চেয়ারম্যান বলেন, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড ডিজিটাল কনটেন্টের ধারণাটি খুবই গুরুত্বের সাথে আমলে নিয়ে কাজ করছে। প্রতিবছর ১২ হাজার ট্রাক কাগজ পাঠ্য পুস্তক প্রকাশের জন্য ব্যবহৃত হচ্ছে- পরিবেশের জন্যও কল্যানকর নয়।

অনুষ্ঠানে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, শিক্ষক সংগঠন, প্রকল্পের কর্ম এলাকার স্কুল শিক্ষক, অভিভাবক, গণসাক্ষরতা অভিযান এর কাউন্সিল (বোর্ড) মেম্বার, সহযোগী সংস্থা (ফ্রেন্ডশীপ), সেভ দ্য চিলড্রেনসহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট দেশি বিদেশি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ও সহযোগী সংগঠনের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।



from টেক শহর https://ift.tt/5EjDyPF
Previous Post Next Post