টু ফ্যাক্টর অথেনটিফিকেশন ব্যবহার করা প্রয়োজন কেন?

টেকশহর কনটেন্ট কাউন্সিলর: টু ফ্যাক্টর অথিনটিকেশন (টুএফএ) একটি নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা যা পেতে হলে একটি নিয়মিত ইউজারনেম এবং পাসওয়ার্ড ছাড়াও একটি অতিরিক্ত শনাক্তকারী ব্যবস্থা ব্যবহার করতে হয়। ব্যাংক, ইমেইল প্রদানকারী এবং প্রিয় গেমিং প্লাটফর্ম থেকেও এই টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন সেটআপ করার অনুরোধ আসে। অনেকেই এই টু ফ্যাক্টর অথিনটিকেশনের বিষয়টি বোঝতে পারে না বা কেন এটি ব্যবহার করতে হয় সে তা-ও পরিস্কার নয় তাদের কাছে।

টুএফএ বোঝতে হলে ওয়ান ফ্যাক্টর অথিনটিকেশন আগে বোঝতে হবে। এরপর একে বাস্তব বিশ্ব এবং ভার্চুয়াল সিকিউরিটি মডেলের সাথে তুলনা করতে হবে। বিষয়টি এভাবে বোঝানো যায়। যখন আমরা কাজ থেকে ফিরে ঘরে প্রবেশ করতে চাই তখন চাবি দিয়ে দরজার তালা খুলি। এখানে সাধারন ওয়ান ফ্যাক্টর অথিনটিকেশন ব্যবহার করা হয়েছে। এক্ষেত্রে চাবিটি ঘরের মালিক নাকি তার প্রতিবেশি অথবা অপরাধীর হাতে রয়েছে সেটি কোন বিষয় নয়। এখানে শুধুমাত্র চাবিই মুখ্য বিষয়। একইভাবে শুধুমাত্র ইউজারনেম অথবা পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে ওয়েবসাইট বা কোন অ্যাকাউন্টে প্রবেশ করা যায়।

ঘরের চাবি অথবা অ্যাকাউন্টের পাসওয়ার্ড যদি চুরি না হয় তাহলে তো ভালই। তবে যদি চাবি চুরি হয় তাহলে ঘরের জিনিসপত্র হাওয়া হবে; ভার্চুয়াল জগতে এটি আরো জটিল আকার ধারণ করে। ফলে টু ফ্যাক্টর অথিনটিকেশন প্রয়োজন।

Techshohor Youtube

টু ফ্যাক্টর অথিনটিকেশন কি?

টু ফ্যাক্টর অথিনটিকেশন হচ্ছে মাল্টি-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশনের (এমএফএ) একটি অংশ। সব টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশনই মাল্টি-ফ্যাক্টর। তবে সব মাল্টিফ্যাক্টরই টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন নয়। এমএফএ সিস্টেমের জন্য তিন ,চার অথবা এরও বেশি অতিরিক্ত প্রমানীকরনের প্রয়োজন হয়। টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশনে দুই বা তিন প্রমানীকরনের ব্যবহার হয়। যেমন-

-আপনি যা জানেন (ব্যাংক কার্ডের পনি অথবা ইমেইল পাসওয়ার্ড)
-আপনার কাছে যা আছে (ব্যাংক কার্ড বা প্রমানীকরন টোকেন)
-যা আপনি (ফিঙ্গারপ্রিন্টের মতো বায়োমেট্রিক্স অথবা আইরিস প্যাটার্ন)

আপনি যদি ডেবিট কার্ড ব্যবহার করে থাকেন তাহলে আপনি টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশনের সহজ রূপ ব্যবহার করেছেন। তবে এক্ষেত্রে পিন জানা অথবা হাতে কার্ড থাকাই যথেষ্ট নয়। এটিএমএ ব্যাংক অ্যাক্সেসস রাখতে উভয়ই প্রয়োজন হবে।

টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন বিভিন্ন রূপ নিতে পারে এবং এখনো ২ থেকে ৩ প্রমানীকরনের শর্ত পূরণ করতে পারে। এটি আরএসএ সিকিউরআডির মতো ফিজিক্যল টোকেন হতে পারে যা ক্রমাগত সিকিউর কোড তৈরি করে।

টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন কেন ও কোথায় ব্যবহার করা হবে?

টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন ব্যবহার করা যায় এমন সবক্ষেত্রেই এটি ব্যবহার করা উচিত। নিরাপত্তা বৃদ্ধি এবং পরিচয় চুরি, আর্থিক লোকসান ও সর্বোপরি নানারকম ঝক্কি এড়াতে এটি খুবই ঝামেলাবিহীন সহজ উপায়। ২০১৯ সালে সম্পন্ন মাইক্রোসফটের এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, অ্যাকাউন্ট হ্যাকের যে ঘটনাগুলো ঘটেছে সেখানকার ৯৯ দশমিক ৯ শতাংশেরই টু অথেনটিফিকেশন সক্রিয় ছিলো না।

সবকিছুর ক্ষেত্রেই কি এই টুএফএ প্রয়োজন? তার প্রয়োজন নেই। ব্যক্তিগত তথ্য থাকে না এবং প্রকৃত ইমেইল অথবা অর্থ সংক্রান্ত তথ্য থাকে না এমন ক্ষেত্রগুলোয় এই টুফ্যাক্টর প্রয়োজন হয় না।

ক্রেডিট কার্ড অথবা প্রাথমিক ইমেইল অ্যাকাউন্টে দ্বিতীয় স্তরের অথেনটিকেশন থাকলে তা খুবই চমৎকারভাবে নিরাপত্তা বৃদ্ধি করে। অ্যাকাউন্ট চুরি অথবা অন্যকোনভাবে অবৈধ প্রবেশের ফলে যে ব্যক্তিগত এবং আর্থিক ট্রমা সৃষ্টি হয় তা টু অথেনটিফিকেশন চালুর মাধ্যমে এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব।

যদি ব্যাংক টু ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন চালুর অফার দেয় তাহলে এটি গ্রহন করাই উচিত। পেপলের মতো ফিন্যান্সিয়াল টুলের ক্ষেত্রে বিষয়টি ভুলে যাওয়া চলবে না। এছাড়া যেসব পরিষেবা থেকে টাকা পাঠানো বা গ্রহন করা হয় সেক্ষেত্রে ২এফএ ব্যবহার করতে হবে। ফাইল ব্যাকআপ, ছবির ব্যাকআপের মতো ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহে রাখে এমন ক্ষেত্রেও ২এফএ ব্যবহার করতে হবে। ভিডিও গেম প্লাটফর্মের ক্ষেত্রেও এটি প্রয়োজনীয়।

আরএপি



from টেক শহর https://ift.tt/pnSv1IZ
Previous Post Next Post